শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৪৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ
ভারতীয় ৪৪০ বোতল মদসহ পিকআপ ভ্যান আটক শ্রীবরদীতে তালা ভেঙ্গে পরীক্ষা নিলেন ইউএনও মাভাবিপ্রবিতে অপ্রীতিকর অবস্থায় পরকীয়া প্রেমিকের সাথে আটক দুই সন্তানের মা প্রার্থিতা স্থগিতের পর নতুন চমক, নাদিরা মিঠু বিএনপির মনোনীত প্রার্থী কাস্তের আঘাতে কলেজছাত্রী জখম, অভিযুক্ত সজীব জনতার হাতে আটক ডিমলায় কৃষকদের মাঝে সার ও ধান বীজ বিতরণ দোয়ারাবাজার সীমান্তে চেলা নদীতে বালু উত্তোলনকালে মাটি চাপায় যুবক আহত মাদারীপুরে ২৪ ঘন্টার আলটিমেটাম দিয়ে অবরোধ তুলে নিলেন শিক্ষার্থী চারঘাটে পৌরসভা মাস্টার প্ল্যান সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শকরণ সভা চারঘাটে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত লালপুরে ছেলের প্রতি অভিমান, মায়ের মর্মান্তিক আত্মহত্যা ঝিনাইদহে ৩ বছরের সাবার লাশ মিলল প্রতিবেশীর ঘরে সলিয়াবাকপুরে শ্রমিকদলের আয়োজনে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মোনাজাত কমলনগরে চকলেট ও টাকার লোভ দেখিয়ে শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা বাউফলে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের আগুনে পুড়ে গেল ঘর খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় পবিপ্রবি জিয়া পরিষদের মিলাদ ও দোয়া মাহফিল শিবচরে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘Career Path and Higher Education Expo-2025’ অনুষ্ঠিত শেরপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল ইসলামের নির্বাচনী আলোচনা সভা নাসির নগরে ০৮ বছরের এক শিশুকে ধর্ষনের পর হত্যার অভিযোগ

চরলাপাং হয়তো থাকবেই না আগামী মানচিত্রে- মেঘনার গর্ভে বিলীন হতে বসা এক গ্রাম

আরিফুল ইসলাম, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধ:

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার পশ্চিম ইউনিয়নের চরলাপাং- এক সময়ের প্রাণবন্ত ও সমৃদ্ধ জনপদ। ছয় সিট জুড়ে বিস্তৃত এই গ্রামের প্রতিটি কোণে ছিল জীবনের স্পন্দন। কিন্তু আজ সেই চরলাপাং হারানোর পথে। মেঘনা নদীর ভয়াল ভাঙনে একে একে হারিয়ে গেছে ১, ২, ৩, ৪ ও ৫ নং সিট। এখন টিকে আছে কেবল ৬ নং সিট — সেটিই তাদের শেষ আশ্রয়, শেষ লড়াই।

নদীভাঙনের গ্রাসে ইতিহাস স্থানীয়দের ভাষায়, চরলাপাংয়ের প্রায় ৯৫ শতাংশ এলাকা ইতোমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

একসময় চার কিলোমিটার বিস্তৃত গ্রামটি এখন সঙ্কুচিত হয়ে দাঁড়িয়েছে মাত্র দেড় থেকে দুই কিলোমিটার এলাকায়। প্রতিদিনই মেঘনার ঢেউ এসে নতুন জমি, ঘরবাড়ি আর স্মৃতি গিলে খাচ্ছে।

এক বৃদ্ধ গ্রামের মানুষ কান্নাভেজা কণ্ঠে বলেন, “আমরা জমি হারাইছি, ঘর হারাইছি, এখন মনটাও হারায় ফেলছি।”

শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ঝুঁকিতে, বর্তমানে এই অবশিষ্ট সিটে রয়েছে- ৮টি মসজিদ, ২টি মাদ্রাসা, ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি কিন্ডারগার্টেন, ৩টি মাছ চাষের পুকুর, ২টি বাজার।

এর মধ্যে পুরাতন বাজারটি ইতোমধ্যেই নদীর গর্ভে হারিয়ে গেছে। নতুন বাজারটিও এখন ভাঙনের মুখে।

মানুষদের আশঙ্কা, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ—সবকিছু বিলীন হয়ে যাবে।
জনসংখ্যা ও জীবিকা বর্তমানে চরলাপাং গ্রামে প্রায় ৬ হাজার ভোটার রয়েছে।

তিনটি ওয়ার্ড (১, ২ ও ৩ নং) নিয়ে গঠিত এই গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষিজীবী ও দিনমজুর।
তাদের মুখে একই আর্তনাদ- আমরা শুধু জমি হারাই নাই, শিকড় হারাইছি। এখন একটা সিটে গাদাগাদি কইরা বাঁচতাছি।”

সরকারের কাছে আবেদন- চরলাপাংবাসীরা বহুবার প্রশাসনের কাছে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ ও পুনর্বাসনের আবেদন করেছেন। কিন্তু আজও তেমন কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই।

এক স্থানীয় সমাজকর্মীর কণ্ঠে হাহাকার- “যদি এখনই বাঁধ না হয়, তাহলে চরলাপাং নামটা শুধু ইতিহাস বইতে থাকবে।” উপসংহার চরলাপাং আজ কেবল একটি গ্রামের নাম নয়- এটি হারিয়ে যেতে থাকা মানুষের আর্তনাদ, একটা ইতিহাসের বিলাপ।

মেঘনার ঢেউ প্রতিদিন যেন প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়- “চরলাপাং কি টিকবে আগামী প্রজন্মের মানচিত্রে?”
গ্রামবাসীর শেষ প্রার্থনা একটাই — “আমাদের বাঁচান, আমাদের চরলাপাং বাঁচান।”

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩